Posts

Showing posts from 2025

গোবিন্দ সেন লেনের চুনী মণি দাসীর রথযাত্রা: এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য (Chuni Mani Dasi's Rath Yatra on Gobinda Sen Lane: A Century-Old Legacy)

Image
বউবাজারের গোবিন্দ সেন লেন, কলকাতার বুকে এক প্রাচীন রথের সাক্ষী। এখানে চুনিমণি দাসী প্রতিষ্ঠিত ১২৫ বছরেরও বেশি পুরোনো একটি রথ, যা শুধু কাঠের কাঠামো নয়, বরং ধর্মীয় ভক্তি, শিল্পকলা এবং পারিবারিক ঐতিহ্যের এক জীবন্ত উদাহরণ। এই রথযাত্রা, যা একসময় রাজপথ দিয়ে যেত, এখন বাড়ির উঠোনে সীমাবদ্ধ হলেও, এর জৌলুস ও ভক্তি এতটুকুও কমেনি। চুনী মণি দাসীর রথটি পাঁচ চূড়াবিশিষ্ট এবং ত্রিতল। এর নির্মাণশৈলীতে সাবেক শিল্পরীতির সুস্পষ্ট ছাপ দেখা যায়। রথের চার কোণে চারটি পুতুল সজ্জিত এবং রথের গায়ে আঁকা আছে দেবদেবীর মন মুগ্ধ করা ছবি। এই কারুকার্যময় রথটি শুধু একটি বাহন নয়, এটি এক চলমান শিল্পকর্ম, যা সেই সময়ের শিল্পীদের দক্ষতা ও নান্দনিকতার পরিচয় বহন করে। এই রথের মূল আকর্ষণ হলেন ভগবান জগন্নাথ। কথিত আছে, পুরীর নব কলেবরের সময় অতিরিক্ত নিম কাঠ দিয়ে যে জগন্নাথ বিগ্রহ তৈরি হয়েছিল, সেই নিমকাঠের একটি অংশ দিয়েই চুনী মণি দাসীর রথের জগন্নাথ বিগ্রহ তৈরি হয়েছে। এই বিগ্রহের মধ্যে একটি শালগ্রাম শিলাও প্রতিষ্ঠিত আছে, যা এর পবিত্রতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই বিশেষত্বই এই পরিবারের জগন্নাথকে এক অনন...

মুর্শিদাবাদের ওয়াসিফ মঞ্জিল: এক বিস্মৃত ইতিহাসের জীবন্ত দলিল (Wasif Manzil in Murshidabad: A Living Document of a Forgotten History)

Image
উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে, যখন ভারত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে একটি সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, সেই সময়ে মুর্শিদাবাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। প্রিন্স ওয়াসিফ আলি মির্জা, ইউরোপের মাটিতে দীর্ঘ পড়াশোনা শেষে এক আধা-ইংরেজ রূপে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। মুর্শিদাবাদের মসনদে তখন তাঁর পিতা, নবাব হাসান আলি মির্জা। বিলেতের জীবনযাপনের প্রভাবে ওয়াসিফ আলি মির্জার রুচি ও জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এসেছিল। তিনি ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদে বাস করতে চাইলেন না। কিন্তু নতুন প্রাসাদ নির্মাণের মতো আর্থিক সামর্থ্যও তাঁর ছিল না। ঠিক এই সময়ে ১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে পুরনো প্রাসাদের একটি অংশ ভেঙে পড়েছিল। সেই ভাঙা অংশটিকেই সংস্কার করে তিনি এক নতুন প্রাসাদ নির্মাণ করেন, যার নামকরণ করেন নিজের নামানুসারেই – ওয়াসিফ মঞ্জিল। তখনও তিনি নবাব হননি। ১৯০৬ সালে পিতা নবাব হাসান আলি মির্জার প্রয়াণের পর প্রিন্স ওয়াসিফ আলি মির্জা নবাব বাহাদুর উপাধি ধারণ করেন। ওয়াসিফ আলি মির্জা এই প্রাসাদটি মূলত বসবাসের উদ্দেশ্যেই নির্মাণ করেছিলেন। তবে তাঁর ভাগ্যে এই প্রাসাদে দীর্ঘকাল বসবাস লেখা ছিল না। নবাব হওয়ার পর ...

কালের সাক্ষী দুই কামান: বাচ্চাওয়ালি ও জাহানকোষার সাথে মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্য (Echoes of Time: The Legacy of Bachhawali and Jahan Kosha in Murshidabad)

Image
মুর্শিদাবাদের প্রাণকেন্দ্রে, ভাগীরথী নদীর শান্ত অথচ প্রবহমান স্রোতের পূর্ব তীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এক স্থাপত্যের বিস্ময় – হাজারদুয়ারি প্রাসাদ। এই ত্রিতল অট্টালিকা কেবল একটি ইমারত নয়, বরং কালের সাক্ষী, নবাবী ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। এর উত্তরে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ চত্বরের প্রান্তে শোভা পায় বাংলার বৃহত্তম ইমামবাড়া, যা মহরমের পবিত্র স্মৃতি বহন করে চলেছে যুগ যুগ ধরে। হাজারদুয়ারি এবং ইমামবাড়ার নিবিড় সান্নিধ্যে এক মনোরম প্রাঙ্গণে দৃষ্টিগোচর হয় শুভ্র মদিনা, যা অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার স্মৃতিস্তম্ভ রূপে আজও স্বমহিমায় বিরাজমান। এই মদিনাই সেই অস্থির সময়ের একমাত্র নীরব সাক্ষী। এর পাশেই কালের নীরব প্রহরী রূপে শায়িত রয়েছে এক বিশাল কামান – বাচ্চাওয়ালি তোপ, যা কেবল আকারে নয়, লোমহর্ষক কিংবদন্তীর জন্যও বিখ্যাত। শোনা যায়, নবাব হুমায়ুন জা যখন এই অঞ্চলের শাসনকর্তা, তখন এই লৌহদানব ভাগীরথীর গভীর তলদেশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। বাচ্চাওয়ালি তোপের নির্মাণকাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে আজও বিতর্ক বিদ্যমান। কেউ মনে করেন ত্রয়োদশ অথবা চতুর্দশ শতাব্দীর গৌড়ের কোনো অজ্ঞাত সু...

হাজারদুয়ারি প্রাসাদ এবং তার প্রাঙ্গণে কয়েকটি দ্রষ্টব্য, মুর্শিদাবাদ (Hazarduari Palace and its Surroundings: Must-See Sights in Murshidabad)

Image
মুর্শিদাবাদ জেলার হাজারদুয়ারি প্রাসাদ হলো মুর্শিদাবাদের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। এই হাজারদুয়ারির আকর্ষণেই মুর্শিদাবাদে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক আসেন। তবে একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের ধারণা, এটা বানিয়েছেন নবাব সিরাউদ্দৌলা। কিন্তু বাস্তবে, সিরাজের মৃত্যুর অনেক পর এটা বানানো হয়েছে। এটি বানিয়েছিলেন তৎকালীন নবাব নাজিম হুমায়ূন জা। বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ার্সের স্থপতি কর্নেল ডানকান ম্যাকলিওড, ইটালিয়ান ধাঁচে এই প্রাসাদটি তৈরী করেন।  প্রাসাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে আগস্ট, এবং কাজ সম্পুর্ণ হয় ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে। ৮০ ফিট উঁচু, দৈর্ঘ্যে ৪২৫ ফিট ও প্রস্থে ২০০ ফিট, তিনতলা এই প্রাসাদের নির্মাণকার্যে খরচ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ষোলো লক্ষ টাকা। চুন সুরকির গাঁথনিতে ব্যবহার করা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে ডিমের কুসুম, মৌরী ভেজানো জল এবং খয়ের জল। প্রাসাদের প্রধান প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে কালো ব্যাসল্ট পাথরের প্রশস্ত সিঁড়ি, এবং সিঁড়ির দুই পাশে রয়েছে সিংহের মূর্তি। সিংহের মূর্তির পাশে রয়েছে মাঝারি আকৃতির কামান।  এই প্রাসাদটি বানানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল দরবার পর...

নবাব সরফরাজ খাঁ এবং তার অসমাপ্ত ফুটি/ফৌতি মসজিদ, মুর্শিদাবাদ (Nawab Sarfaraz Khan and his incomplete Fouti Mosque, Murshidabad)

Image
নবাব সুজাউদ্দিনের মৃত্যুর পর, পুত্র সরফরাজ খাঁ ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার মসনদে আরোহণ করেন। এনার মায়ের নাম ছিল জিন্নাতউন্নিসা। সুজাউদ্দিন ছিলেন একজন অলস, বিলাসী, এবং ধর্মভীরু নবাব। তার সময়ে হারেমে ১৫০০ বেগম এবং মসজিদে ১০০ বেতনভোগী মোল্লা রাখতেন। সমস্ত রাজ্যের দায়ভার তিনি মন্ত্রিসভার ওপরে দিয়ে, নিজে রমণীবিলাসে দিন কাটাতেন। এরফলে কিছুদিনের মধ্যেই মন্ত্রণাসভার লোকজনের সাথে তার মতবিরোধ দেখা দিলো, এবং তারা নেমে পড়লেন সরফরাজকে সিংহাসন থেকে সরানোর কাজে।  পারস্য সম্রাট নাদিরশাহ দিল্লি আক্রমণ করেই মোরাদ খাঁ ও সরবলন্দ খাঁকে পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী দিয়ে বাংলায় পাঠালেন রাজস্ব আদায়ের জন্য। নবাব তাদের রাজস্ব প্রদান করলেন। নাদির শাহ পারস্য ফিরে যেতেই দিল্লি সিংহাসনে বসলেন মুঘল সম্রাট মহম্মদ শাহ, এবং চাইলেন রাজস্ব। নবাব একই বছরে দুবার রাজন্ব দিতে অস্বীকার করেন। সুযোগ বুঝে হাজি আহম্মদ, আলমচাঁদ ও জগৎশেঠ দিল্লির সম্রাটকে দিলেন উৎকোচ ও প্রতিশ্রুতি, যে এই বছরই দেবেন রাজস্ব, কিন্তু তার বিনিময়ে চাই বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাবি ফরমান। সম্রাট রাজী হলেন। হাজি আহম্মদের ভাই আলিবর্দীকে, সরফরাজের ...

মতিঝিল জামা মসজিদ ও একটি রহস্যময় ঘর (The Enigmatic Motijheel Jama Mosque and a Mysterious Chamber)

Image
বাংলার নবাবী শাসনের স্বর্ণালী ইতিহাসে মুর্শিদাবাদ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এই ঐতিহাসিক শহরের বুকে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু স্থাপত্য, যার মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল রত্ন হল মতিঝিল জামা মসজিদ, যা স্থানীয়ভাবে কালা মসজিদ বা মতিঝিল মসজিদ নামেও পরিচিত। এই মসজিদ শুধু মুর্শিদাবাদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যই বহন করে না, বরং এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রও বটে। নবাব আলীবর্দী খানের ভগ্নীপতি এবং বড় মেয়ে মেহেরুন্নেসার স্বামী ছিলেন নবাব মহম্মদ নওয়াজেশ আলি খান। মেহেরুন্নেসা ইতিহাসে ঘসেটি বেগম নামেই অধিক পরিচিত। নিঃসন্তান এই দম্পতি তাদের আপন বোন আমিনা বেগমের পুত্র, এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার বৈমাত্রেয় ভাই একরামউদ্দৌলাকে দত্তক নিয়ে সন্তান স্নেহে লালন-পালন করেছিলেন। ইতিহাস গবেষকদের সূত্রে জানা যায়, এই মতিঝিল মসজিদে স্বয়ং সিরাজউদ্দৌলার দাদু আলীবর্দী খাঁ নিয়মিত নমাজ পড়তে আসতেন, এবং শৈশবে ছোট্ট সিরাজও হয়তো দাদুর হাত ধরে এই পবিত্র স্থান এসেছেন। তবে নিয়তির পরিহাসে, নিঃসন্তান আলীবর্দীর বড় কন্যা ঘসেটি বেগম সিরাজের কনিষ্ঠ ভ্রাতা একরামউদ্দৌলাকে পুত্রবৎ স্নেহ দিলেও, অল্প বয়সেই তার অকা...

সুজাউদ্দিন খানের মসজিদ ও সমাধি, রোশনিবাগ (Tumb and Mosque of Shuja Uddin Khan, Roshnibagh)

Image
সুজাউদ্দিন খানের পুরো নাম মুতামুল মুলক মির্জা সুজাউদ্দিন মহম্মদ খাঁ আসাদ জং। ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বুরহানপুরে তার জন্ম হয়। নবাব মুর্শিদকুলি খানের অধীনে তিনি চাকরি করার সময়, নবাবের স্নেহভাজন হন, এবং ১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি উড়িষ্যার সুবেদারের পদে উন্নীত হন। নবাবকন্যা আজিমুন্নিসা বেগমের সাথে সুজাউদ্দিন বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। মুর্শিদকুলি খানের মৃত্যুর পর তিনি সুবে বাংলার দ্বিতীয় নবাব হিসেবে মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে বসেন। ভোগবিলাসী জীবনযাপনের জন্য স্ত্রীয়ের সাথে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। কিন্তু রাজত্ব শাসনের বিষয়ে ছিলেন অনেকটাই দক্ষ, এবং নিয়মিত মুঘল দরবারে রাজস্ব পাঠাতেন (বছরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা)। তাই তৎকালীন দিল্লির বাদশাহের সাথে, সুজাউদ্দিনের সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। বিরাট একটি সেনাবাহিনী তিনি রেখেছিলেন, যার মধ্যে ছিল বাঙালি, আফগানি, তুর্কি ও তেলেঙ্গানার সৈন্যরা এবং একটি নৌসেনা বাহিনী। সুবে বাংলাকে তিনি শাসনের সুবিধার্থে চার ভাগে ভাগ করে দেন - ১. পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের কিছু অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিভাগ। ২. পূর্ববঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, শ্রীহট্ট ও চট্টগ্রাম নিয়ে ঢাকা বিভাগ। ৩....

খোশবাগ, মুর্শিদাবাদ: আফসার রাজবংশের শেষ আশ্রয়স্থল (Khoshbagh, Murshidabad: The Final Sanctuary of the Afshar Dynasty)

Image
মুর্শিদাবাদের ভাগীরথী নদীর শান্ত তীরে অবস্থিত খোশবাগ নামটি তার মতোই মনোরম। এটি শুধু একটি বাগান নয়, বাংলার তৎকালীন ভাগ্যবিধাতা নবাব আলীবর্দী খাঁ এবং তাঁর বংশধরদের অনন্ত বিশ্রামের স্থান। অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে, যখন ক্ষমতার সূর্য মধ্যগগনে, আলীবর্দী নিজের হাতে এই শান্তির নীড় নির্মাণ করেছিলেন। সমাধিক্ষেত্রের মাঝখানে সমতল ছাদযুক্ত চৌকো সৌধটির মধ্যে নবাব আলীবর্দী খাঁ (১৭৪০-১৭৫৬) ও তাঁর প্রপৌত্র সিরাজ উদ-দৌল্লার (১৭৫৬-১৭৫৭) সমাধি অবস্থিত। এছাড়াও সমাধিস্থ আছেন সিরাজের গর্ভধারিণী মাতা ও সহধর্মিণী, আদরের কন্যা, এবং আরও অনেক আত্মীয়-পরিজন, যাঁদের পদস্পর্শে একদা এই মাটি মুখরিত ছিল। এই স্নিগ্ধ কানন কেবল আফশার বংশের সদস্যদের অনন্ত বিশ্রামের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। নবাবের প্রিয় অবকাশ যাপন কেন্দ্র ভাগীরথীর শান্ত স্রোতের পাশে অবস্থিত এই মনোরম গোলাপবাগান নবাব আলীবর্দী খাঁর অত্যন্ত প্রিয় অবকাশ যাপনের স্থান ছিল। কর্মব্যস্ত দিনের শেষে যখন ক্লান্তি তাঁকে ঘিরে ধরত, তখন তিনি সপরিবারে বজরাযোগে এই শান্তির নীড়ে আগমন করতেন। গোলাপের স্নিগ্ধ সুবাসে আমোদিত এই স্থানটির নাম তিনি ভালোবেসে রেখেছিলেন ...

বেলতলা ঘোষ ঠাকুরবাড়ি: এক ঝলকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য (Beltala Ghosh Thakurbari: A Glimpse into History and Heritage)

Image
কলকাতার ১২, নরেশ মিত্র সরণি (পূর্বতন বেলতলা রোড)-এ অবস্থিত বেলতলা ঘোষ ঠাকুরবাড়ি শুধু একটি মন্দির নয়, এটি শ্রীশ্রী ঈশ্বর রাধাবল্লভ জিউ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী ঈশ্বর রাধারাণী জিউ ঠাকুরানীর সম্পত্তি। ১৮৮৫ সালে এই মন্দিরটি নির্মিত হলেও দেব-দেবী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল আরও অনেক আগে, বাংলা ১২৫৯ সালের বৈশাখ মাসে (১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ)। মন্দির প্রাঙ্গণে ঢুকলেই চোখে পড়ে সুরম্য বাগানের মধ্যে, ছয় জোড়া স্তম্ভের উপর অবস্থিত সুন্দর দালান আকৃতির মূল মন্দির। ঘোষ পরিবারের বারোজন সদস্যের একটি পরিচালনা কমিটি প্রতিদিনের পূজা-অর্চনা ও মন্দিরের সুষ্ঠু পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১১:৩০ টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮:৩০ টা পর্যন্ত মন্দিরের দ্বার খোলা থাকে ভক্তদের জন্য। এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সমস্ত প্রধান উৎসব যেমন ঝুলনযাত্রা, জন্মাষ্টমী, নন্দোৎসব, রাধাষ্টমী, রাসযাত্রা এবং দোলযাত্রা মহাসমারোহে পালিত হয়। বিশেষ করে দোলযাত্রা এখানে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। এই দিনে দেব-দেবী মূল মন্দির থেকে বেরিয়ে প্রাঙ্গণে স্থাপিত সিংহাসনে অধিষ্ঠান করেন, যাতে ভক্তরা তাঁদের স্পর্শ করে পূজা করতে পারেন। ...