সাউথ পার্ক স্ট্রিট সেমেটারী : এখানে ঘুমিয়ে আছে ইতিহাস (South Park Cemetery)
উনবিংশ শতকের, ইউরোপ আর আমেরিকার বাইরের সবথেকে বড় ক্রিস্টিয়ানদের কবরখানা হলো সাউথ পার্ক স্ট্রিট সেমেটারী। এটা পুরোনো বিনা চার্চের কবরখানাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৭৬৭ সাল থেকে ১৮৩০ সাল পর্যন্ত এটা ব্যাবহার হয়েছিল। বর্তমানে এটা একটা হেরিটেজ সাইট। এই কবরখানার জন্যই পার্ক স্ট্রিটের নাম আগে ছিল বারিয়াল গ্রাউন্ড স্ট্রিট। পার্ক স্ট্রিট, আর মল্লিকবাজারের সংযোগস্থলে রয়েছে এই কবরখানা। এটি ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবার পরে, কাছেই আর একটি কবরখানা খোলা হয়, লোয়ার পার্ক স্ট্রিট সেমেটারী, সম্ভবতঃ ১৮৪০ সালে।
ভিতরে ঢুকলে, একটা অদ্ভুত গা ছম ছমে ভাব আসে। বাইরের এত কোলাহল, ভিতরে এসে পৌঁছায় না। বহু বিখ্যাত লোকের সমাধি আছে যেখানে, তাদের মধ্যে অন্যতম ডিরোজিও এবং হিন্দু স্টুয়ার্ট। হিন্দু স্টুয়ার্টের কবরটি মন্দিরের আদলে গড়া। কবরের উপরের স্মৃতিসৌধগুলো গথিক, এবং ইন্দো-ইউরোপিয়ান ধাঁচে গড়া। সৌধগুলো দেখে, আর স্মৃতিফলকের লেখাগুলো দেখে, পুরোনো সময়ে হারিয়ে যাওয়া যায়। সেই সময়ের কতো দোদন্ডপ্রতাপি লোকজন, চিরঘুমে ঘুমিয়ে রয়েছে এখানে। কর্তৃপক্ষ জায়গাটি মোটামুটি পরিষ্কার রেখেছে।
ভিতরে কয়েকটি আমগাছ আছে, সেখানের আম কর্তৃপক্ষ বিক্রি করে দিচ্ছেন। দুটো লোক ভ্যানগাড়ি নিয়ে এসে আম পেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "দাদা, এগুলো কি ভৌতিক আম?" লোকটা হা করে রইলো! আমি আবার বললাম - "মানে এখানের একটা আমের সাথে কি একটা ভূত ফ্রি?"
লোকটা আমার দিকে কট মট করে তাকিয়ে বললো - "জানিনা! যান তো এখান থেকে!"
প্রতিদিন সকালে ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই সেমেটারী। প্রবেশমূল্য ২০ টাকা মাথাপিছু। তবে DSLR টাইপের ক্যামেরা নিলে, তার জন্য আলাদা টিকিট করতে হয়। এই ভিড় শহরের মধ্যে, পুরোনো মানুষগুলোর মধ্যে সময় কাটাতে চাইলে, এই জায়গাটি একেবারে আদর্শ। তবে অনুরোধ করবো, অন্ততঃ দুজন একসাথে আসবেন, তাহলে বেশি ভালো লাগবে।
Comments
Post a Comment