সি.এন.আই. ওয়েসলেয়ান চার্চ, সদর স্ট্রীট গির্জা (CNI Wesleyan Church, Sudder Street Girja)
ভারতীয় জাদুঘরের পাশ দিয়ে সদর স্ট্রিটে ঢুকলে, বাম হাতে লক্ষ্য করা যায় একটা ছোট ছিমছাম চার্চ, লোকমুখে যার পরিচিতি সদর স্ট্রীট গির্জা (Sudder Street Girja) বলে।
এই গির্জার প্রতিষ্ঠা করেন ওয়েসলেয়ান মেথডিস্ট মিশনারী রেভারেন্ড জেমস ব্রুডবেন্ট (Rev. James Broodbent)। এই গির্জা তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল সৈনিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য একটা মেথডিস্ট চার্চ তৈরি করা। তিনি আর Mr. HG Highfield মিলে ১৮৬২ সাল থেকে তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন, শেষ পর্যন্ত ১৮৬৬ সালে ১৫ নম্বর সদর স্ট্রিটের ঠিকানায় এই গির্জার উদ্বোধন হয়।
শুরুর সময় থেকেই, প্রতি রবিবার এখানে দুটি করে প্রার্থনাসভা হতো। সকালের প্রার্থনায় আসতেন স্থানীয় সাধারণ মানুষেরা, আর সন্ধ্যার প্রার্থনায় আসতেন সৈনিক ও ফোর্ট উইলিয়ামের অফিসাররা। এছাড়াও চার্চে কিছু সামাজিক কাজকর্ম এবং বিদ্যালয়ও চালানো হতো। এখনো সেই স্কুল আছে চার্চের পাশে, St. Thomas Day School.
বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যেসব বিদেশি সৈনিকরা কোলকাতায় এসেছিলেন, তারা নিয়মিত এই চার্চে আসতেন। এখানে তাদের ধর্মীয় বাণী শোনানো হতো, জীবনের প্রতি অনুপ্রাণিত করা হতো, বিশ্রামের জায়গা ও কিছু খাদ্য-পানীয়ও দেওয়া হতো। সেই সৈনিকদের কৃতজ্ঞতা-জ্ঞাপক একটা ফলক এখনো চার্চে লক্ষ্য করা যায়। পরবর্তীকালেও, বহু সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করেছে এই গির্জা।
ভারতের স্বাধীনতার পরে যখন বিদেশিরা এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে থাকে, তখন ধীরে ধীরে এই চার্চের ভিড় কমে যেতে থাকে। বিকেলের প্রার্থনাসভা বন্ধ করে দেওয়া হয়, এবং আগের মতো আর বৃহৎ কর্মকান্ডও থাকে না। এরপরে ১৯৭০ সালে এটি Church of North India (CNI) এর অধীনস্ত হয়, এবং নতুন নাম হয় সি.এন.আই. ওয়েসলেয়ান চার্চ।
তথ্যসহায়তা: দিব্যেন্দু ব্যানার্জি
তথ্যসূত্র: কলকাতার উপাসনালয়, প্রথম খন্ড - পীযূষকান্তি রায়
জানা ছিলোনা, পড়ে জানলাম। ভালো লাগলো বেশ
ReplyDeleteআমাদের এই ক'লকাতায়, কতই না অজানা ঐতিহ্য লুকিয়ে রয়েছে। তেমনই একটি সুন্দর তথ্য জানবার সুযোগ পেলাম আজ ।।
Deleteযতবারই গেছি তালা ঝোলাই পেয়েছি। আপনার দৌলতে ভেতরটা দেখা ও তার সাথে এর ইতিহাস জানাটাও হয়ে গেল। ধন্যবাদ।
ReplyDelete