ভবানীপুর ২৩ পল্লী অষ্টধাতুর দুর্গা (23 Palli Durga Temple, Bhowanipore)
দুর্গাপূজা বাঙালির সবথেকে বড়ো উৎসব। এই নিয়ে সারাবছর মেতে থাকি আমরা! কিন্তু কোলকাতায় যতো কালীমন্দির আছে, সেই অনুপাতে দুর্গামন্দির নেই। দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম দুর্গামন্দিরটি রয়েছে ভবানীপুর অঞ্চলে, হরিশ মুখার্জি রোডের ২৩ পল্লী দুর্গা মন্দিরে। এখানে রয়েছে অষ্টধাতু অর্থাৎ আটটা ধাতুর সংমিশ্রণে তৈরী প্রায় চোদ্দো ফুট উঁচু ও তিন টন ওজনের একটি অপরূপ দুর্গামূর্তি। কাঠামোর নিচের দিকে লক্ষী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশের মূর্তি রয়েছে। খুব সম্ভবতঃ, এশিয়াতে আর এতো বড়ো অষ্টধাতুর দুর্গামূর্তি নেই। এনার পোশাকি নাম 'হিমালয় কন্যা'।
এই মূর্তির একটা বিশেষত্ব হলো, মায়ের মুখটি ডান দিকে ফেরানো। এর কারণ ডান দিকে রয়েছে মহাদেবের একটি মূর্তি (আলাদা করে ছোট মন্দির করা), তাই মা তার স্বামীর দিকে মুখ করে রয়েছেন। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এখানে মাটির মূর্তিতেই পুজো হতো, তবে সেটা বছরে পাঁচদিন, দুর্গাপুজোর সময়ে। ১৯৮০ সাল নাগাদ, দশমীতে মাকে বরণের সময় দেখা যায় মায়ের মূর্তির চোখে জল! এর পরেই রাতারাতি সেখানে স্থায়ী মন্দির তৈরী করে, অষ্টধাতুর মূর্তি বানানো শুরু হয় ১৯৮১ সালে, বেনারসের বিশিষ্ট শিল্পী এবং ভাস্কর শ্রী শিউনাথ বিশ্বকর্মার হাতে। মূর্তির কাজ শেষ হয় ১৯৮৫ সালে। মূর্তি উদ্বোধন করেন যোশীমঠের শঙ্করাচার্য্য, এবং পুজোর সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। এর পর থেকে নিত্যপুজো হয় এখানে।
এই স্থায়ী মন্দির বানানো সম্পর্কিত আরো দুটো ঘটনা আমি পাই, স্থানীয় মানুষদের জিজ্ঞাসা করে। প্রথম ঘটনা হলো, এই জমিটি একজন স্থানীয় বিধবা মহিলার ছিল, মায়ের চোখের জলের নামে সেটা চালাকি করে নেওয়া হয়। আর দ্বিতীয় ঘটনা বলছে, জমিটি ছিল স্নেহাংশু আচার্য্য নামের এক স্থানীয় বিত্তশালী লোকের। প্রথমে চোখের জলের ঘটনার মাধ্যমে তার এই জমিটি নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও, পরে তিনি সেটা সামান্য কিছু দামের বিনিময়ে হস্তান্তর করেন।
এই তারিখগুলো আমি পেয়েছি ওই মন্দিরের এক প্রবীণ সদস্যের থেকে। তবে আমার একটু সন্দেহ আছে, কারণ আমার মা ১৯৮১-৮৩ পর্যন্ত যোগমায়া দেবী কলেজে পড়েছেন, এবং উনি প্রথম থেকেই ওই মূর্তিটি দেখেছেন। তবে আমি একটা পুরোনো ফটোগ্রাফ জোগাড় করেছি ১৯৭৮ সালের, তখন মাটির মূর্তিতেই পুজো হতো।
মন্দিরের ভিতরেই একটি লক্ষী-নারায়ণ মন্দিরও রয়েছে। তবে চোখ টেনে নেয় এই দুর্গামূর্তিটিই। বিরাট ঢাকা মন্দির চাতালে প্রচুর মানুষ একসাথে বসতে পারেন, এবং অনেকেই এখানে এসে ধ্যান করেন। খুব ভোরে হয় মঙ্গলারতি, তারপর নিত্যপুজো ও ভোগ। সন্ধ্যাবেলা আবার সন্ধারতি ও শীতলভোগ। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১২টা, বিকেলে ৫টা থেকে ৯.৩০ পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে।
মন্দিরের গুগল লোকেশন নিচে রইলো।
https://g.co/kgs/Z4Yafm
প্রতীক্ষায় থাকি এমন চোখের আলোয় দেখা জিনিস এর চোখের বাইরের খবর পাবো কখন।
ReplyDeleteSnehangshu Acharya jomi ta prothom a case kore jit a ekta trust kore mondir er nam a jomi ta dan koren, Kintu jobordokhol karider kache tini matha noyan ni
ReplyDelete