রাজা রামমোহন রায় মেমোরিয়াল মিউজিয়াম, কোলকাতা (Raja Rammohun Roy Memorial Museum, Kolkata)
উত্তর কোলকাতার Amherst Street দিয়ে হেঁটে গেলে, 85A নম্বর বাড়িটার সামনে এলে আপনাকে থমকে দাঁড়াতে হবে। এই বাড়িটা এমন একজনের পারিবারিক বাড়ি, যার কাছে প্রতিটি হিন্দু মেয়ে কৃতজ্ঞ থাকবে। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন আধুনিক এক ভারতের। দেশের মানুষকে অতীতমুখী, মধ্যযুগীয় মানসিকতার গণ্ডি থেকে বের করে এনে এক নতুন যুগের জীবন দর্শনের আলো দেখানোই ছিল উদ্দেশ্য। গভীর ইতিহাস চেতনা, দৃঢ়তা আর ঈশ্বরবিশ্বাস তাঁর জীবন সংগ্রামে বার বার প্রকাশ পেয়েছে। তবু, তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য তৎকালীন হিন্দু পণ্ডিতসমাজ তাঁকে ‘পাষণ্ড’, ‘ম্লেচ্ছ’, ‘বকধূর্ত’, ‘কাপটিক’, কিংবা ‘নগরান্তবাসী’ নামে সম্বোধন করেছিলেন। এমনকী, এক সময় হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের গোঁড়া, ধর্মান্ধ, অসহিষ্ণু কিছু মানুষ তাঁর প্রাণনাশেরও চেষ্টা করেছিল। সে জন্য তাঁকে কম হেনস্থাও হতে হয়নি। তবু, চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষকে ভালবেসে, বদ্ধ এই সমাজের মধ্যে আলোড়ন তুলে তিনি চেয়েছিলেন সমাজ ব্যবস্থার ক্ষতিকারক নানা দিক বদলে ফেলতে।
তিনি রাজা রামমোহন রায়। আজ রাস্তাটির নাম বদলে তার নামেই হয়েছে রাজা রামমোহন সরণি। বাড়ির নাম্বার একই আছে, আর এই বাড়িটি হয়েছে 'রাজা রামমোহন রায় মেমোরিয়াল মিউজিয়াম', যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে রামমোহন কলেজ। একদিন ঢুকে পড়েছিলাম এই বাড়িতে।
'সিমলা হাউস' নামে পরিচিত এই বাড়িটির দোতালাতে আছে একটি সংগ্রহশালা। সেখানে আছে রাজার ব্যবহৃত বই, আসবাব, অনেক ছবি ও মূর্তি, জামাকাপড়... এমনকি ওনার কবরে ব্যবহৃত মুখোশটির একটা প্রতিলিপি, যা ব্রিস্টল থেকে নিয়ে এসেছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়। ঘরগুলো হেঁটে বেড়াতে রোমাঞ্চ বোধ হয় এই ভেবে, একসময় এই মহান ব্যক্তিত্ব হেঁটে বেড়িয়েছেন এই বাড়িতে।
দোতলায় রয়েছে একটি লম্বা ঝুলবারান্দা। সেখান থেকে দেখা যায় একটা বাগান ও আউটহাউস। পাশেই আছে বাড়ির নিজস্ব পুকুর, কিন্তু সেটা এখন সংস্কার না করার জন্য একটা মজে যাওয়া জলায় পরিণত হয়েছে, এবং পাঁচিল দিয়ে মূল বাড়ির থেকে এটিকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। পুকুরের পাশে ধ্বংস হয়ে যাওয়া কাপড় বদলানোর জায়গাটা এখনো বোঝা যায়। তবে পাঁচিল ঘেঁষে ঘাটের চাঁদনীটিকে খুব সুন্দরভাবে রক্ষণ করা হয়েছে।
একতলাতে রয়েছে একটি বড়ো হলঘর, যেখানে রাজার সম্পর্কিত অনেক ছবি রয়েছে। এছাড়া রয়েছে একটি লাইব্রেরিও।
মিউজিয়াম খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত, প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও অন্য সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ। টিকিটের দাম ১০টাকা মাথাপিছু, আর ক্যামেরা ব্যবহার করলে আরো ৫০টাকা দিতে হবে।
মন্দির-মসজিদ-গির্জায় তো আমরা সবাই যাই, কিন্তু আমার কাছে এগুলোই আসল তীর্থ। সবাইকে অনুরোধ করবো, নিজের ব্যাস্ত সময় থেকে কিছুটা সময় বের করে, একদিন ঘুরে আসতে এই তীর্থক্ষেত্র।
আপনার এই খুঁজে বেড়ানোয় সমৃদ্ধ হলাম।
ReplyDeleteOne of my most respected Indian personality. He fought against the cult of "sati" which was barbaric. He fought against superstitions in the then so called dogmatic "Hindu society"
ReplyDeleteMy name is Abhijit Rakshit
DeleteThe date should be 24th July 2022
ReplyDeleteThis building was renovated by Public Works Department, Government of West Bengal the the then concerned architect was Manisha Rakshit during 1990s - Abhijit Ralshit
ReplyDeleteThis building was renovated by Public Works Department, Government of West Bengal the then concerned architect was Manisha Rakshit during 1990s - Abhijit Ralshit
ReplyDeletePlease ignore the first comment because of typographical mistake .
ReplyDelete