গৌরিশঙ্করের নিরামিষ মশলা ঘুগনি, বউবাজার
স্ট্রীট ফুড চিরকালই আমার প্রিয়। তবে লকডাউনের সময়ে বাইরে না খেয়ে, সুফল হিসেবে দেখলাম বেশ ৫ কিলো ওজন কমে গেল! তাই আজকাল বাইরে খাওয়াও কমিয়ে দিয়েছি!
তবে হ্যাঁ, বৌবাজারের রাস্তায় গেলে, এই গৌরীশংকর ঘুগনিদাদার নিরামিষ মশলা ঘুগনি আমি কখনোই ছাড়ি না! বেলা যখন গড়িয়ে আসে, চশমার দোকানগুলোর আলো জ্বলে ওঠে, অফিসফেরতা বাবুরা দৌড়াতে থাকেন হাওড়া-শিয়ালদা-সেন্ট্রাল স্টেশনের দিকে... তখন ধীরে ধীরে ভিড় জমতে শুরু করে এই ফুটপাথের অস্থায়ী দোকানটিতে। ১০টাকা-১৫টাকা-২০টাকা... এই তিনটি দামে পাওয়া যায় ঘুগনি।
এবার ঘুগনির বর্ণনায় আসি। স্টোভের ওপরে কাঁসার থালায় স্তূপাকৃতি ঘুগনি আর আলুর মিশ্রণ। তাতে একটু একটু জল দিয়ে, আর নানান ভাজা মশলা দিয়ে... নরম করে মাখা হয় সেই মিশ্রণ। ঘুগনির রং তখন হয়ে যায় কালচে খয়েরি! এই বিশেষ মশলাই কিন্তু ঘুগনির আসল সিক্রেট!
এবার সেই মশলা ঘুগনির মধ্যে আলাদা করে কারেন্ট-নুন, শুকনোলংকা গুঁড়ো, তেঁতুল গোলা, লেবুর রস দিয়ে মেখে, কাঁচালংকা-টমেটো-পেঁয়াজ-ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে পরিবেশন! সাথে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এক ফালি নারকোলের টুকরো স্বমহিমায় বিরাজমান!
এবার প্রথম চামচ ঘুগনিটা যখন নিজের মুখে পুরবেন, তখন অবশ্যই চোখটা বন্ধ করে নেবেন, কারণ টক আর ঝালের স্বাদমাখা ঘুগনির অনুভুতিটা নিতে হলে, বৌবাজারের রাস্তার হই-চৈ থেকে নিজেকে একটু আলাদা করে নিতে হবে!
সাথে 'পাও ব্রেড'ও নিতে পারেন।
অফিস-ফেরত অনেকেই কিন্তু টিফিনবাটি করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন এই ঘুগনি। তবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যেই কিন্তু গল্প শেষ, গৌরিশঙ্কর বিক্রি শেষ করে ঝাঁকা তুলে রওয়ানা হবেন... কারণ পিঁপড়ে এসেও আর চাটার জিনিস খুঁজে পাবেনা সেখানে! সব বিক্রি হয়ে যায়!
ঠিকানাটা হলো ২০, বি. বি. গাঙ্গুলী স্ট্রীট, কোলকাতা - ৭০০ ০১২ এর সামনের ফুটপাত। ছবির সাথে Youtube ভিডিওর লিংক দিলাম।
Comments
Post a Comment