Posts

Showing posts from October, 2023

কারমেলাইট চ্যাপেল, আউটরাম স্ট্রিট (Carmelite Street, Outram Street)

Image
শেক্সপিয়ার সরণির বুক চিরে চলে গেছে একটা ছোট রাস্তা, যার নাম আউটরাম স্ট্রিট। এখানে একটা বাড়িতে রয়েছে খ্রিস্টান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের একটা মঠ, যা সাধারণ মানুষের খুব একটা দৃষ্টিগোচর হয় না। এর কারণ এখানে বাস করেন কারমেলাইট সন্ন্যাসিনীরা, যারা সামাজিকভাবে কোনো সেবাকার্যতে অংশগ্রহণ করেন না। মানবসমাজের দৃষ্টির আড়ালে থেকে, তারা নিজেদের মতো ঈশ্বরের আরাধনায় নিমগ্ন থাকেন... আত্মমুক্তি ও মানুষের সর্বাঙ্গীন মঙ্গলকামনায়। মঠভবনের ভেতরেই তাদের প্রার্থনার জন্য রয়েছে নিজস্ব চ্যাপেল। তাদের মূল ব্রত হল প্রার্থনা, উপবাস, প্রায়শ্চিত্ত, মৌনতা, নিঃসঙ্গতা ও কায়িক শ্রম।  ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বিশপ ফার্দিনান্দ পেরিয়ারের আমন্ত্রণে সংঘের পাঁচজন সন্ন্যাসিনী বেলজিয়াম থেকে কলকাতায় আসেন। তাদের জন্য তখনও মঠ প্রতিষ্ঠার কোনও উদ্যোগ না হওয়ায়, প্রথমে তারা প্রায় দুই বছর খিদিরপুরের সেন্ট ভিনসেন্ট হোমে অতিথি হিসেবে থাকেন। এরপর হেস্টিংস অঞ্চলে মঠ প্রতিষ্ঠার জন্য জমি কেনা হল, কিন্তু তাও আবার সৈন্যবিভাগের প্রয়োজনে সরকার অধিগ্রহণ করল। শেষে জনৈক মুসলমান জমিদারের কাছ থেকে বর্তমান বাড়িটি কিনে করে ১৯

পর্তুগিজ কবরখানা, শিয়ালদা (Portuguese Cemetery, Sealdah)

Image
শিয়ালদা স্টেশনের ট্রেন ধরা আর বাড়ি পৌঁছানোর তাগিদে অনেকেই খেয়াল করেন না একটা ছোট লাল রঙের চার্চকে, যার ঠিকানা ৩০৮, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রোড।  চার্চটি নিয়ে আমি আগেই লিখেছিলাম। কিন্তু যেটা বাইরে থেকে দেখা যায় না, সেটা হলো চার্চ সংলগ্ন একটা কবরখানা, যেটা ক্যাথলিকদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা। মজার বিষয় হচ্ছে, কবরখানা প্রতিষ্ঠিত হয় চার্চ তৈরির আগে। কলকাতার বিখ্যাত পর্তুগিজ বণিক জোসেফ ব্যারেটো এ জমি ৮০০০ টাকায় কিনে ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে তা সমাধিক্ষেত্র স্থাপনের জন্য দান করেছিলেন, উদ্দেশ্য ছিল শহরে পর্তুগিজদের জন্য একটি আলাদা সমাধি ক্ষেত্র তৈরি করা। কলকাতার অনেক চার্চ ও চ্যাপেলের প্রতিষ্ঠার পিছনে ব্যারেটো পরিবারের অবদান ছিল। এখানে প্রথম ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে একটি চ্যাপেল গড়ে ওঠে, তার নাম ছিল সেমিট্রি-চ্যাপেল... যা পরবর্তীকালে একটি চার্চের রূপ নেয়।  অনেকদিন ধরে চেষ্টা করা সত্ত্বেও, আমি এই কবরখানাতে একদিন ঢুকতে পেরেছিলাম (এর কারণ সাধারণ মানুষের জন্য খুব কম সময় এই চার্চ খোলা থাকে)। চার্চের পিছনের দিকেই রয়েছে এই কবরখানা, যার শেষ হয়েছে শিয়ালদা স্টেশনের প্ল্যাটফর্

দ্য রাসেল এক্সচেঞ্জ : ভারতের প্রাচীনতম নিলামঘর (The Russell Exchange : Oldest Auction House of India)

Image
সময়টা তখন মোটামুটি ১৯৪০ সালের মাঝামাঝি। পৃথিবী জুড়ে বাজছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। এই সময় উত্তরপ্রদেশের বেরিলি থেকে কলকাতায় ব্যাবসা করতে এলেন আব্দুল মাজিদ, মাথায় ছিল তীক্ষ্ণ ব্যবসায়িক বুদ্ধি এবং হৃদয়ে ছিল পুরনো জিনিসের প্রতি ভালোবাসা। সেই সূত্রে মাজিদ-সাহেব কলকাতার এদেশীয় ধনী এবং অভিজাত পরিবারের লোকজনের সাথে আলাপ বাড়াতে শুরু করলেন। কলকাতাতে তখন ইংরেজ এবং অন্য ইউরোপিয়ানরা ধীরে ধীরে পাততাড়ি গোটাচ্ছেন। এছাড়াও চাকরির সূত্রে এদের ট্রান্সফার লেগেই থাকতো। তাই কলকাতা ছেড়ে চলে যাবার সময় এরা নিজেদের সাধের ফার্নিচারগুলো নিয়ে পরতেন খুব সমস্যায়। তাই চাইতেন কোনোভাবে সেগুলো বিক্রি করে দেবার। এদিকে এদেশীয়দের মধ্যে এসব ব্যবহার করা জিনিষ এবং আসবাবের আকর্ষণ প্রবল! তাই সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মিলন করার জন্য রাসেল স্ট্রীটে আব্দুল মাজিদ খুলে বসলেন একটা নিলামঘরের ব্যবসা, নাম দিলেন 'দ্য রাসেল এক্সচেঞ্জ'! বিক্রির জন্য আসতে লাগলো বিরাট পিয়ানো, ঝাড়লণ্ঠন, শ্বেতপাথরের টেবিল, নরম গালিচার মতো অজস্র জিনিস। ভেনিশিয়ান বা বোহেমিয়ান গ্লাস এর জিনিস, সতসুমা টি-সেট, অধুনা দুষ্প্রাপ্য ইংল্যান্ডের রয়্