Posts

Showing posts from April, 2022

হেস্টিংস চ্যাপেল, কোলকাতা (Hestings Chapel, Kolkata)

Image
হেস্টিংস থেকে যে রাস্তাটা ক্লাইড রোড হয়ে সোজা স্ট্যান্ড রোডের দিকে চলে গেছে, সেই রাস্তা দিয়ে একটু এগোলেই বাম দিকে পরবে একটা চ্যাপেল, যার নাম হেস্টিংস চ্যাপেল। গথিক স্থাপত্যরীতিতে বানানো, হলুদ রঙের খুব সাধারণ একটি স্থাপত্যকীর্তি এটি। ঠিকানাটি হলো ১০ সেন্ট জর্জস গেট রেড, কোলকাতা - ৭০০ ০২২. বইপত্র ঘেঁটে জানলাম, এই চ্যাপেলটি খুব সম্ভব ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল, এবং এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন লেডি বেন্টিক। খিদিরপুর অঞ্চলে বন্দর বানানোর ফলে ওই অঞ্চলে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাই তাদের জন্য বানানো হয়েছিল এই চ্যাপেল। আমি এর ভিতরে ঢুকতে পারি নি। বর্তমানে চ্যাপেলটি ইউনাইটেড মিশনারী চার্চের অধীনস্থ। দারোয়ানের সাথে কথা বলে অফিসঘর পর্যন্তও গেছিলাম, কিন্তু অফিসে উপস্থিত ভদ্রলোকটি আমাকে সাহায্য করতে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করলেন। রবিবার করে এখানে ইংরেজি, হিন্দি ও তেলেগুতে প্রার্থনাসভা হয়। এছাড়াও মঙ্গলবার করে বাইবেল পড়ানো হয়, বৃহস্পতিবার করে কটেজ প্রেয়ার মিটিং হয় এবং শনিবার করে ইউথ মিটিং হয়। তথ্যসূত্র: Ten walks in Calcutta : Prosenjit

সৈয়দ আলী শাহর দরগা, হেস্টিংস কলকাতা (Syed Ali Shah Dargah, Hestings Kolkata)

Image
খিদিরপুর ব্রিজের পাশে ময়দানের ধারে যেখানে বাসগুলো স্টপেজ দেয়, তার নাম হেস্টিংস। ফ্লাইওভারটা এখান থেকে শুরু হয়েছে, ময়দানের ওপর দিয়ে ঘুরে ঘুরে এগিয়ে গেছে সেটা। একপাশে নন্দকুমারের ফাঁসির কুয়ো, অপরদিকে ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব। এরই মাঝে দেখা যায় একটি শান্ত দরগা, যার পোশাকি নাম সৈয়দ আলী শাহর দরগা হলেও, জনমুখে সৈয়দ বাবার দরগা নামেই পরিচিত। সবুজ মাঠের মধ্যে একটি অতি প্রাচীন বটগাছ, আর তার নিচেই সৈয়দ বাবার মাটির সমাধি। এই গাছটি ঘিরেই গড়ে উঠেছে দরগা। তবে সবথেকে সুন্দর দৃশ্য হলো, দরগা চত্বরে শয়ে-শয়ে পায়রা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দানা খাচ্ছে। দরগার ভিতরে খুবই শান্ত পরিবেশ। ফুল ও ধূপের গন্ধে ভিতরটা মো মো করে। এখানে মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের মানুষও এসে প্রার্থনা করেন, মনস্কামনা করে সুতো বেঁধে যান, বাবার সমাধিতে চাদর চড়ান। দরগার ভিতরে ছবি তোলা সম্পূর্ণভাবে নিষেধ আছে। আমি সৈয়দ বাবার পাশে আরেকটি সমাধি দেখলাম, জিজ্ঞাসা করে জানলাম ওটা ওনার স্ত্রীর সমাধি। মাজারের বাইরে একটা প্লাস্টিকের রেকবি করে বাবার সমাধির ওপরে ব্যবহার করা পুরোনো গোলাপের শুকিয়ে যাওয়া পাপড়ি রাখা আছে, চাইলে ভক্ত

গন্ধেশ্বরী মন্দির, কোলকাতা (Gandheswari Temple, Kolkata)

Image
গন্ধেশ্বরী মন্দিরের কথা বলতেই আমাদের হুগলি জেলার বিখ্যাত মন্দিরটির কথা মনে পরে। কিন্তু আমাদের খোদ কোলকাতার বুকেই রয়েছে একটি গন্ধেশ্বরী মন্দির, যা খুব প্রাচীন না হলেও বেশ প্রসিদ্ধ। এই মন্দিরটি উত্তর কোলকাতায় ঠনঠনিয়া কালিবাড়ির কাছেই, বলক দত্ত লেনে প্রতিষ্ঠিত। তবে এই মন্দিরের বিষয়ে আরো জানার আগে, আমরা দেখে নেব, বেদব্যাস রচিত 'মহানন্দীশ্বর পুরাণ'-এ দেবীর উৎপত্তি সম্পর্কে কি বলা হয়েছে। সুভুতি নামের এক ব্যক্তির পুত্র হলেন গন্ধাসুর। বেনেদের হাতে বাবার অপমানের প্রতিশোধ নিতে এই গন্ধাসুর তপস্যা করে বলীয়ান হয়ে ওঠে, এবং বেনেদের ওপরে চরম অত্যাচার শুরু করে। একদিন সে আক্রমণ করে সুবর্ণবট নামের এক সমৃদ্ধ বেনের বাড়িতে, এবং তাকে হত্যা করে। সুবর্ণবটের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী চন্দ্রাবতী কোনোভাবে জঙ্গলে পালিয়ে বাঁচে এবং জঙ্গলের মধ্যেই একটি কন্যাসন্তানকে জন্ম দিয়ে মারা যায়। সেই জঙ্গলের মধ্যেই ছিল ঋষি কশ্যপের আশ্রম। দেবী মহামায়া তাকে স্বপ্নে দর্শন দিলেন, এবং সেই কন্যাটিকে লালন-পালন করার আদেশ দিলেন। মেয়েটির শরীর থেকে অপূর্ব সুগন্ধ বের হতো সবসময়। তাই ঋষি মেয়েটির নাম রাখলেন গন্ধবতী। সময়ের সাথ

বটকৃষ্ণ পাল : এক অবিস্মরণীয় বাঙালি ব্যবসায়ী (Bata Krishna Pal : An Unforgotten Bengali Businessman)

Image
হেদুয়ার লেকের যেই দিকটাতে ক্রাইস্ট চার্চ রয়েছে, সেখানে পার্কের ধারে একটি মূর্তি রয়েছে। মূর্তিটি এক বাঙালি ভদ্রলোকের, ধুতি-চাদর পরিহিত এবং বাম পায়ের ওপরে ডান পা তুলে বসে আছেন। চোখে মুখে রয়েছে আত্মপ্রত্যয়ী ভাব। এই ভদ্রলোকের নাম বটকৃষ্ণ পাল। ইনি দেখতে খুব সাধারণ হলেও, ভারতীয় চিকিৎসাজগতে তিনি এক অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। এনার নামেই উত্তর কোলকাতার বি. কে. পাল এভেনু।  শোভাবাজার স্ট্রিট ধরে হাঁটলে, হাটখোলা পোস্ট অফিস পেরিয়ে ৯২ নম্বর (পুরোনো ঠিকানা ৮২, বেনিয়াটোলা ষ্ট্রীট) তিনতলা বাড়িটার সামনে এলে থমকে যেতে হয়। আশেপাশের সব পুরোনো বাড়িগুলোর থেকে এটা অনেকটাই আলাদা, যেন শিল্পী পরম যত্নে বানিয়েছেন এই বাড়ির সব নকশা। বাড়ির ভিতরে রয়েছে একটি ডিস্পেনসারি, আর ওপরে লেখা আছে ‘বটকৃষ্ণ পাল, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট’। এটি ভারতের প্রথম হাসপাতালের বাইরের ২৪ ঘন্টা খোলা থাকা ওষুধের দোকান।  শুরুটা কিন্তু একদিনে হয় নি। হাওড়া শিবপুরে ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয়েছিল বটকৃষ্ণর। শোভাবাজার অঞ্চলে ছিল তার মামার বাড়ি, তাই দারিদ্রের তাড়নায় মাত্র ১২ বছর বয়সে চলে এলেন এখ