জন্নত-এ-জাকারিয়া : রমজানের সময় জাকারিয়া স্ট্রিটে ইফতারের খানা-খাজানার ইতিহাস (Jannat-e-Zakaria : a brief history of the Iftar foods available at Zakaria Street in Ramzan time)

এখন ইসলামে রমজান মাস চলছে, সামনেই ঈদ। প্রথমেই একটা কথা বলে নি, এই শব্দটাকে আমরা দুভাবে দেখি... রমজান (Ramzan) যা একটি পার্শিয়ান শব্দ, এবং রমদান (Ramadan) যা একটি আরবিক শব্দ। দুটোই সঠিক, এবং দুটোই ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি অবশ্য ছোটবেলা থেকেই রমজান শুনে আসছি, তাই সেটাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

কোলকাতায় যে রমজান পালন হয়, তার সাধারণতঃ তিনটে দিক আপনারা দেখতে পাবেন।
প্রথমতঃ, ঈশ্বরের প্রতি অপার ভক্তি।
দ্বিতীয়তঃ, রাজনীতির বিভিন্ন কায়দাকৌশল।
তৃতীয়তঃ, বিভিন্ন ধরণের মোগলাই বা পার্শিয়ান খাদ্য ও পানীয়ের সম্ভার!

আমি এই তৃতীয় দিকটা নিয়েই আলোচনা করবো।
এই সময়টা কোলকাতার প্রধান মুসলিম এলাকাগুলোতে, অর্থাৎ মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, পার্কসার্কাস, জাকারিয়া স্ট্রীট... এসব এলাকায় সন্ধ্যার পরে পাওয়া যায় প্রচুর ইফতারের খাবার। (সূর্যাস্তের পরে উপবাসভঙ্গ করার জন্য যে মিল খাওয়া হয়, তাকেই ইফতার বলে)।

বিগত কয়েকবছর ধরে, আমাদের এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে ইফতারের খাবারের স্বর্গ হিসেবে উঠে এসেছে জাকারিয়া স্ট্রিটের নাম। এর প্রধান কারণ হিসেবে আমার মনে হয়েছে, কসমোপলিটন অঞ্চল হিসেবে শহরের মাঝে অবস্থান ও যাতায়াতের সুবিধা। জাকারিয়া স্ট্রীট (Zakaria Street) একটা মোটামুটি লম্বা রাস্তা, যার একমুখে রবীন্দ্রসরণি ও নাখোদা মসজিদ... আর অপরমুখে সেন্ট্রাল এভেনুর মহম্মদ আলী পার্ক। এই রাস্তার নামের বানানটা হবসন-জবসন আর কোলকাতার পুরোনো ম্যাপে পাওয়া যায় 'Jacquaria Street' হিসেবে।


এই অঞ্চলে রাস্তাটা আগেই ছিল। নাখোদা মসজিদ তৈরি হবার পরে একে বাঁধিয়ে চওড়া করা হয়। আর নামকরণ হিসেবে যে তথ্যটা পেয়েছি, সেটা হলো নাখোদা মসজিদের প্রথম মোতোয়ালি (Chairman of the Managing Committee) হাজী নূর মহম্মদ জাকারিয়া... তাঁর নামেই রাস্তার নামকরণ।

এবার এই রাস্তাটার চরিত্রের দিকে খেয়াল করা যাক! এখানে আপনি বেশিরভাগ অবাঙালি সম্ভ্রান্ত মুসলমানদের দেখবেন, যাদের কথার মধ্যে আছে উর্দূর টান! এর কারণটা খুঁজতে খুঁজতে, একটা অদ্ভুত তথ্য পেলাম! ইংরেজরা আউধ (Awadh) থেকে যখন ওয়াজিদ আলীকে আত্মীয়-বন্ধুসহ মেটিয়াবুরুজে নির্বাসন দিলো, তখন সেটা হয়ে উঠেছিল ছোট লখনৌ। কিন্তু অনেকেই এটা জানেন না, এই জাকারিয়া স্ট্রিটও হয়ে উঠেছিল আওয়াধিদের আরেকটা বাসস্থান। বহু লোকজন পরবর্তীকালেও আউধ থেকে এসে এখানে নাখোদাকে কেন্দ্র করে বসতি গড়ে তোলেন। এই প্রসঙ্গে একটা লাইন মনে পরে গেল --
“The distance between cities is always small; a villager, travelling a hundred miles to town, traverses emptier, darker, more terrifying space.”
----- Salman Rushdie

আবার ফিরে আসি রমজানের খাবারের বিষয়ে। এই প্রসঙ্গে বলি, খাবার ছাড়াও কিন্তু এখানে রমজান উপলক্ষে পোশাক, সুগন্ধী, প্রসাধনী প্রভৃতির বাজার বসে। আরেকটা কথা বলি, এখানে এই সময়ে যে খাবারগুলো বিক্রি হয়, আপনি সারাবছর এর অনেকগুলোই এখানকার স্থায়ী দোকানগুলোতে মোটামুটি পাবেন। শুধু কয়েকটা বিশেষ খাবার শুধু রমজানের সময়েই বানানো হয়। আজকাল অনেকেরই এই জাকারিয়া স্ট্রিটের ফুড ফেস্টিভেল আর খাবারের বিবরণ দিয়ে লিখছেন।


তাহলে কেন যাবেন এখানে???
আমিই বা এই লেখাটা লিখছি কেন???

হ্যাঁ, তাও এখানে যাবেন। যাবেন রাস্তা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাতে থরে থরে সাজানো খাবার দোকান দেখতে। আর যাবেন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবের মিলনক্ষেত্র দেখতে... কারণ এই সময় বিভিন্ন ধরণের লোকজন এসে ভিড় জমায় এই অঞ্চলে... ছবি তোলে, ঘুরে দেখে, মোগলাই খানা চেখে দেখে! ঘোষ-বোস-সাহা-ব্যানার্জি-চ্যাটার্জি-কুপার-ডিসুজা-খাতুন-খান সব মিলেমিশে এক হয়ে যায় এই রাস্তায়... যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা বড়ো উদাহরণ।

আমি এই লেখার মাধ্যমে খাবারের দোকান আর তার স্বাদই শুধু খুঁজবো না, তার সাথে বের করার চেষ্টা করবো সেই পদটার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, আর তার ইতিহাস। তাহলে... গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়া যাক এই জাকারিয়া স্ট্রিটে।


এই সময়টা খুব গরম পড়ে কোলকাতাতে। তাই প্রথমেই মসজিদের গেটের সামনে বিক্রি হওয়া, এক বোতল 'রুহ আফসা' শরবত কিনে ঢক-ঢক করে খেয়ে নেওয়া যাক, আর সাথে কয়েকটা খেজুর! আচ্ছা, এখানে তো কোল্ড ড্রিংকও আছে, তাহলেও এই শরবত কেন? এর কারণ জানতে এই 'রুহ আফসার' শরবতের সৃষ্টিকর্তা, পুরোনো দিল্লির অধিবাসী হাফিজ আবদুল মাজিদের (Hafiz Abdul Majeed) কথা জানতে হবে। দিল্লির নিবাসী এই ইউনানী হাকিম চেয়েছিলেন ইউনানী ওষুধ দিয়েই এমন একটা সুস্বাদু পানীয় তৈরী করতে, যা দিল্লির প্রচন্ড গরমে মানুষের শরীর ঠান্ডা রাখবে। তাই ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি বানিয়ে ফেলেন 'রুহ আফসা' সিরাপ, যার প্রধান উপাদানগুলো ছিল -
১. গাছ গাছড়া: খুরফা বীজ, চিকোরি, কমন গ্রেপ ভাইন, ইউরোপীয় সাদা শাপলা, শাপলা, পদ্ম, তারাফুল, ধনে
২. ফল: কমলালেবু, সাইট্রন,আনারস , আপেল, বেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, লোগানবেরি, কালো জাম, চেরি, কনকর্ড গ্রেপস, ব্ল্যাককুরান্ট, তরমুজ
৩. সবজি: পালংশাক, গাজর, মিন্ট,ধুন্দল
৪. ফুল: গোলাপ, কেওড়া, লেবু, কমলা
৫. মূল: ভেটিভার


পরবর্তীকালে এদের পরিবার থেকেই খোলা হয় হামদর্দ ল্যাবরেটরিস (Hamdard Laboratories) এবং আজ পর্যন্ত এরাই বিক্রি করছেন এই পানীয় সিরাপ।

এবার নাখোদাকে বামদিকে ফেলে এগোনো যাক। দু'ধারেই পড়বে সেমাই এর দোকান। সেই সেমাইয়ের কতো বাহার - দুধে ভেজা সেমাই, ঝরঝরে সেমাই, লাচ্ছা সেমাই, ঘিয়ে ভাজা সেমাই, বাদামে ভরপুর সেমাই, নবাবী সেমাই... রকমফেরের যেন শেষ নেই! ঈদে সেমাইয়ের প্রচলন কিন্তু খুব প্রাচীন নয়। ভারত উপমহাদেশের বাইরে কিন্তু সেমাইয়ের চল বিশেষ নেই, প্রসঙ্গতঃ বলা যায় ইতিহাসে খুব একটা পাওয়া না গেলেও, মোগলদের আগে এই উপমহাদেশে এর অস্তিত্ব দেখা যায় না। বরং বলা যায়, ঊনবিংশ শতকের শেষের দিক থেকে এটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। আর আজকের সময়ে তো এটি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে একটি জনপ্রিয় মিষ্টি খাবার।


এবার এগোনো যাক বিভিন্ন ধরণের মুসলমানি রুটির দিকে। এর মধ্যে দুই ধরণের রুটি বিখ্যাত - যার নাম শিরমল ও বাকরখানি। প্রথমে শিরমল দিয়ে শুরু করা যাক!

শিরমল হলো একধরণের ময়দার তৈরি তন্দুরি রুটি, যাতে ঘি আর চিনি মাখিয়ে, জাফরান ও দারচিনির সুগন্ধে জারিয়ে তোলা হয়। এটা কিন্তু এদেশের জিনিস না, সুদূর পারস্য থেকে এসেছে, যখন পার্শিয়ানরা ধীরে ধীরে ভারত উপমহাদেশের দিকে চলে আসতে শুরু করে। প্রথমে একটি পাকিস্তানি খাবার হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপরে সময়ের সাথে মোগল সাম্রাজ্যের সময়ে উত্তরভারতে চলে শিরমল, এবং সাথে সাথেই এই রুটি আওয়াধি ও হাইদ্রাবাদিদের প্রধান খাদ্য হয়ে ওঠে। আর সেই আওয়াদিরা যখন কোলকাতায় আসেন, তারা নিয়ে আসেন এই রুটি তাদের সাথে।


এবার আসি বাকরখানির কথায়। এটিও একটি তন্দুরি রুটি, যা মিঠা ও নোনতা... দু'রকমভাবেই বানানো যেতে পারে। এর জন্ম আমাদের বাংলায় হলেও, এর সাথে জড়িয়ে আছে অষ্টাদশ শতাব্দীর এক অমর প্রেমকাহিনী, যার অনেকটাই কিংবদন্তির মতো। তখন উড়িষ্যার নায়েব ছিলেন দ্বিতীয় মুর্শিদকুলি খান। তিনি পারস্য থেকে একটি ছেলেকে নিয়ে আসেন তার আশ্রয়ে (মতান্তরে ক্রীতদাস), যার নাম ছিল আগা বাকর খান। খুব তাড়াতাড়ি বাকর খান তার বুদ্ধিমত্তার জন্য তার নেক-নজরে পড়েন, এবং মুর্শিদ তার পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন। এরপর আগা খান রাজ্যশাসনের উপযুক্ত হয়ে ওঠেন, এবং চট্টগ্রামের ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত হন। এছাড়াও বহুদিন বাকলা চন্দ্রদ্বীপের শাসনকর্তা ছিলেন তিনি।

এই সময়েই তার পরিচয় হয় নর্তকী খানি বেগমের সাথে, এবং শুরু হয় তাদের প্রেমকাহিনী। কিন্তু এই সম্পর্কের প্রবল বিরোধী ছিলেন জয়নুল খান, তৎকালীন এক প্রভাবশালী রাজসদস্যের পুত্র... বুঝতেই পারছেন, সেই চিরকালের ত্রিকোণ প্রেমের সমস্যা! এরপরে নানান চক্রান্ত করে, বাবার মাধ্যমে জয়নুল রটিয়ে দেন যে, আগা খান হত্যা করেছেন জয়নুলকে। মুর্শিদকুলি খান তাকে মৃত্যুদন্ড দেন, ও বাঘের সাথে এক খাঁচায় তাকে বন্ধি করে দেওয়া হয়।

আগা খান কিন্তু ছিলেন প্রবল শক্তিশালী পুরুষ। শুধুমাত্র বাহুবলে বাঘকে হত্যা করে, খাঁচা ভেঙে তিনি পালিয়ে যান। জয়নুল কিন্তু এর মধ্যে আবার ফিরে এসে, খানি বেগমকে জোর করে অপহরণ করে, চন্দ্রদ্বীপের জঙ্গলে পালিয়ে যান। আগা খান সেই খবর পেয়ে, হামলা করেন নিজের প্রেমিকাকে বাঁচানোর জন্য। সেই সময় খানি বেগমের মৃত্যু হয় জয়নুলের হাতে, মতান্তরে জঙ্গলে বিষধর সাপের কামড়ে। বাকর খানের কোলে মাথা রেখেই খানি বেগম মারা যান।

পরবর্তীকালে বাকর খান আবার ফিরে আসেন মুর্শিদকুলি খানের কাছে, ও শোনা যায় তার এক মেয়েকেও তিনি বিবাহ করেন। নানান সমাজসেবামূলক কাজেও তিনি নিজেকে নিযুক্ত করেন। একদিন রান্না নিয়ে চর্চা করতে করতে, তিনি এই রুটি আবিষ্কার করে ফেলেন... এবং খানি বেগমের ভালোবাসার স্মৃতিতে এর নাম দেন 'বাকরখানি'। এই খাবারকে তিনি শুধু রাজপরিবারের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে, জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেন... এবং এই বাকরখানির মাধ্যমে তাদের প্রেমগাথা অমর হয়ে ওঠে।


এবার যাওয়া যাক কাবাবের শাবাব দেখতে! এখানে কয়েকটা বিখ্যাত দোকান আছে ফিয়ার্স লেনের আশে পাশে। এছাড়াও রামজনের সময়ে সারা গলিটা জুড়েই বসে অস্থায়ী কাবাবের দোকান। সেই কাবাবেরও অনেক বাহারি নাম - শিক কাবাব, সুতি কাবাব, বোটি কাবাব, খিরি কাবাব, দহি কাবাব, মালাই কাবাব, রেশমি কাবাব, গুরদা কাবাব, গলোটি কাবাব, কলিজা কাবাব, পায়ারে কাবাব, হান্ডি কাবাব... আরো কত্তো কি! কলুটোলা অঞ্চলে তো প্রায় দেড়শ বছর ধরে চলছে কাবাব-কালচার! তবে সব কাবাব বানাতেই কিন্তু শিকের ব্যবহার হয়!  যুৎসই কয়লার আগুনের চুল্লির ব্যবহার ও মশলার সঠিক নির্বাচনই কাবাব রান্নার গোপন রহস্য! এবার আসা যাক এর সৃষ্টির ইতিহাসের বিষয়ে।


সত্যি বলতে মানুষ যখন থেকে মাংস পুড়িয়ে খেতে শিখেছে, তখন থেকেই সৃষ্টি হয়েছে কাবাবের ইতিহাস। তাও প্রথাগতভাবে কাবাবের উৎপত্তি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। অনেকে বলেছেন তুর্কি সৈনিকরাই প্রথম কাবাব বানানোর কৌশল বের করেন। আবার ইবিন বাতুতার বিবরণ থেকে জানা যায়, দ্বাদশ শতকে ভারতে কাবাবের বেশ চল ছিল। এতে বোঝা যায়, মুঘলরা ভারতে আসার অনেক আগেই কিন্তু আফগানরা কাবাবকে নিয়ে এসেছিল ভারতে। তবে হ্যাঁ, এটা মানতেই হবে যে মোগলপূর্ব আমলের কাবাব কিন্তু এতো নরম ও সুস্বাদু ছিল না! মোগল আমলেই সেই আফগানি শক্ত কাবাবকে, মোলায়েম ও মশলাদার করে তোলা হয়! তবে প্রাচ্যের দেশগুলোতে রুটির সাথে কাবাব খাবার চল থাকলেও, ভারত উপমহাদেশে ভাতের সাথে কাবাব খাওয়ার প্রচলন আছে। তবে পনির টিক্কা কাবাব, হরিয়ালি কাবাব, দহি কাবাব... এগুলো কিন্তু পুরোপুরি আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের সৃষ্টি!


এবার একটু ঘুম ভাঙানি পাখি, মানে মুরগির দিকে আসা যাক! রামজানের সময় দুটো বিখ্যাত চিকেনের পদ পাওয়া যায় জাকারিয়া স্ট্রিটে - চিকেন চাঙ্গেজি ও চিকেন আফগানি।

প্রথমে চিকেন আফগানি দিয়ে শুরু করি। এর ইতিহাস সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও, ভারতে আফগানদের আগমনের সাথে সাথে এই পদটি আসে, ও পরবর্তীকালে মুসলমান শাসকদের সাহায্যে, ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে সারা উপমহাদেশে। জিনিসটা দেখতে কিছুটা সাদা হয়, কারণ এতে কাজুবাদাম বাটা এবং দই, এবং বর্তমানে ক্রিম ব্যবহার করা হয়।


এবার আসবে চিকেন চাঙ্গেজি। আদপে জিনিসটা হলো জবরদস্ত মশলা মাখানো ডাবল ফ্রায়েড চিকেনের টুকরো! এবার চেঙ্গিস খানের মতো রক্তপিপাসু শাসকের নামে কেন এই খাবারের নাম হলো, সেটা নিয়ে জোর বিতর্ক আছে! এই খাবারের জন্ম হয়েছিল পুরোনো দিল্লিতে।


একপক্ষের মত, মোগল সম্রাট চেঙ্গিস খান (Ghenghis Khan or Chengez Khan) ভারতে তার প্রিয় এই পদটি নিয়ে আসেন। কারণ এখনো আফগানিস্তানে বা পাকিস্তানে কিছু লোক দেখা যায়, যার পদবি চাঙ্গেজি! এরা নিজেদের দাবি করেন, চেঙ্গিস খানের বংশধর বলে। আবার অন্যমতে, যখন মোগলরা চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করছে, তখন তারা অনেকেই মুঘলপাড়াতে (বর্তমানে পাহাড়গঞ্জের কাছে) আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকেই এই পদটি ছড়িয়ে পড়ে।

ও হ্যাঁ, মাহি আকবরী বাদ চলে যাচ্ছে! এরা হলো একটা মাঝারি সাইজের কাতলামাছকে গোটা অবস্থায় চিরে মশলা মাখিয়ে ভাজা... এক কথাতে আমাদের মাছভাজা! এটা নিয়ে বিশেষ ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে আমার ধারণা, এটা সম্পূর্ণ বাংলার পদ। কারণ বাংলাতে যখন মুসলমানরা এলো, তখন এরা মাছের বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী ছিল না। কিন্তু পরবর্তীকালে, বাংলাতে মাছের জনপ্রিয়তার জন্য এরা মাছের ভক্ত হয়ে ওঠে। কথায় তো বলেই, "মাছে ভাতে বাঙালি!"


এবার বলবো আমার একটা প্রিয় পদের কথা, যা আমি সারাবছরই খাই, সুযোগ পেলেই! আপনারা একে হালিম বা ডালিম যে নামেই ডাকুন... জিনিসটা একই। আগে তো হালিম বলতে সবাই বিফ হালিমই জানতো, এখন মাটন আর চিকেনও ব্যবহার হচ্ছে!


হালিমের উৎপত্তি হয়েছে মধ্য প্রাচ্যের একটা পদ, 'হারিশা' থেকে, যার সবথেকে পুরোনো রেসিপি পাওয়া যায় বাগদাদে, 'কিতাব আল তাবিখ' বইতে (দশম শতাব্দীতে)। ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন এবং স্পেনের ইহুদিদের মধ্যে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার! তবে ভারত মহাদেশে হারিশার আগমন হয় মুঘল সম্রাট হুমায়ূনের হাত ধরে, আর তা প্রসিদ্ধি পায় সম্রাট আকবরের আমলে।

হারিশার থেকে হালিম নাম হবার নেপথ্যে রয়েছে এর রান্নার প্রণালী। হালিমের প্রধান উপাদান হলো বিভিন্ন রকমের ডাল, গম, বার্লি, সুগন্ধি চাল এবং মাংস। প্রথমে বিভিন্ন ডাল মোটামুটি ৭ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়, এবং তারপর সেই ডাল, চাল ও গম ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিয়ে, পিষে রাখতে হয়। এদিকে পরিমাণমত পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, আদা বাটা, এলাচ, লংকা গুড়ো, হলুদ গুড়ো, দারুচিনি ও গরম মশলা সমেত আলাদা পাত্রে মাংস ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হয়। তারপর সেই সেদ্ধ ডাল, চাল ও গম কষানো মাংসের সাথে মিশিয়ে এর সাথে পরিমাণমত জল ও নুন দিয়ে, প্রায় ঘন্টাখানেক নাড়তে হয়। এর ফলে তৈরি হয়, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হালিম।


আরবিতে 'হালিম' শব্দের অর্থ হলো ধৈর্য্যশীল, আর এই রান্নাতে সেটা কতটা লাগবে, সে তো বুঝতেই পারছেন! তাই এভাবেই 'হারিশা' থেকে 'হালিম' নাম হয়ে যায়। তবে মধ্যপ্রাচ্যের হারিশার সাথে কোলকাতার হালিমের প্রধান পার্থক্যটাই হল মশলার ব্যবহারে। ভারতবর্ষে তথা কোলকাতায় মশলার সমারোহ, এবং জনপ্রিয়তার কারণে হালিমও হয় বেশ মশলাদার।

এবার একটু মেন কোর্সের দিকে যাই। এর মধ্যে আমি রাখবো বিরিয়ানিকে। যদিও এখন এই খাবারটি বিশেষত বাঙালির জাতীয় খাদ্য হয়ে উঠেছে, তাও এর কথা বলা দরকার! এই প্রসঙ্গে বলি, বিরিয়ানি উৎপত্তি পার্শিয়াতে, কিন্তু একে ভারতে কিভাবে আনা হয়, সেটা নিয়ে কয়েকটা গল্প চালু আছে।


একটা গল্প বলছে, শাহজাহানের স্ত্রী মুমতাজ বেগম একদিন মোগলদের সেনা ছাউনিতে গিয়ে দেখেন, সেনারা তেমন পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছেন না। তাই তাঁর আদেশেই চাল ও মাংস দিয়ে এই বিরিয়ানি রান্না শুরু হয়। অন্য গল্প বলছে, ১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে এই বিরিয়ানি ভারতে নিয়ে আসেন তুর্কি-মোগল সম্রাট, তৈমুর লং (Taimur)। মোটামুটি বোঝা যায়, মোগলরাই এই খাবার নিয়ে আসে ভারতে, আর পরবর্তীকালে ভারত উপমহাদেশে এটি বিভিন্ন রকমের স্বাদবদল হয়।

কোলকাতার বিরিয়ানি কিন্তু সবার থেকে আলাদা, যার নেপথ্যে রয়েছে নবাব ওয়াজিদ আলী শাহের অবদান। এই বিরিয়ানিতে দেওয়া হয় আলু, যা লাল করে ভেজে, মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয়। তবে শুনেছি জাকারিয়া স্ট্রিটের 'রয়াল হোটেলে' এখনো বিরিয়ানিতে আলু দেওয়া হয় না। সত্যি বলতে, বিরিয়ানির কথা বলতে শুরু করলে, সেটা নিয়েই একটা আলাদা আর্টিকেল লিখতে হবে!


এবার আসবো শেষের দিকে, আমি বিশ্বাস করি... "মধুরেণ সমাপয়েৎ" অর্থাৎ মিষ্টি দিয়ে শেষ করার বিষয়ে। তবে মিষ্টির এতো বৈচিত্র্য কিন্তু আমাদের ভারত উপমহাদেশেরই অবদান! ইফতারের সময় জাকারিয়া স্ট্রিটে মোটামুটি যা মিষ্টি পাওয়া যায়, সেটা বিক্রির রাজা হলো 'হাজী আলাউদ্দিন' নামের একটি দোকান।


পেটমোটা ময়দার খোলে কিশমিশ মাখা রসালো ক্ষীরের পুরে ভরা 'মাওয়া কি কচোরি', খাস্তা অমৃতি, মাওয়া লাড্ডু, মতিচুর লাড্ডু, নারকেল বরফি, কাজু বরফি, কালাকাঁদ, ঘিয়ে ভাজা গুলাবজামুন... হাজি আলাউদ্দিনের সব কিছুতে যেন উত্তরভারতের ছোঁয়া অনুভব করবেন। আর এদের ঈদ স্পেশাল 'বাত্তিসি হালুয়া' যা মাওয়া, কাজু সহ সর্বমোট ৩২ টি উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, সেটা না খেলে ঠকতে হবে!


এই সময়ে জাকারিয়া স্ট্রিটে আরেকটা জিনিস পাওয়া যায়, সেটাও বেশ নতুন একটা ডেজার্ট... নাম 'শাহী টুকরা'। জিনিসটা আর কিছুই না, ক্ষিরে ভেজানো এক টুকরো পাউরুটি!


এবার আসি দুটি প্রধান মুসলিম ডেসার্টের প্রসঙ্গে, যার নাম ফিরনি ও ফালুদা! প্রথমে বলি ফিরনির কথা, কারণ এর ইতিহাস আমার বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে!

ফিরনি মূলত আরব দেশের খাবার। শেরশাহের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে, মোগল সম্রাট হুমায়ূন দিল্লী ছেড়ে ইরানে আশ্রয় নেন। যাওয়ার পথে সাথে নেন শাহী বাবুর্চিদের। ইরানের বাদশাহকে উপহার হিসেবে খাওয়ান শাহী বাবুর্চিদের তৈরি ভারতীয় খিঁচুড়ি, যার স্বাদে মাতোয়ারা হয়ে তৎকালীন ইরান সম্রাট, হুমায়ূনকে বদলে খাওয়ান ফিরনি! পরবর্তীকালে হুমায়ূন পুনরায় দিল্লী জয় করে দিল্লীর মসনদে বসার পর, ইরানি ফিরনিকে ভারতীয় ডেজার্ট হিসেবে চালু করেন। শাহী বাবুর্চিদের হাত দিয়ে বানানো শুরু হয় সেই ইরানি ফিরনি!


পায়েস আর ফিরনিতে কিছু পার্থক্য আছে। পায়েসে চাল আস্ত রাখা হয়, কিন্তু ফিরনিতে চাল এমনভাবে প্রসেস করা হয় যাতে একটা চাল ভেঙে তিন থেকে চার টুকরা হয়, অর্থ্যাৎ খাওয়ার সময় মুখে যেন দানা দানা লাগে। তবে খেজুর গুড় দিয়ে ঘন সর পড়া ফিরনি... সত্যি খুব লোভনীয়।

এবার শেষ করবো ফালুদার গল্প দিয়ে। রোজার ইফতার পর্বে চাই পুষ্টিকর ও বিশুদ্ধ খাবার। সে ক্ষেত্রে ইফতারে ফালুদা হতে পারে উৎকৃষ্ট খাবার। অতিরিক্ত গরমে ফালুদা যেমন আরামদায়ক, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মত... একই সঙ্গে বেশ সুস্বাদুও। ইফতারে এক গ্লাস ফালুদা নিমেষেই ফিরিয়ে আনে কর্মশক্তি, শরীরকে করে তোলে সতেজ ও তরতাজা।


ফালুদার উৎপত্তি হয়েছে পারস্য দেশে, 'ফালুদেহ' নামে একটি ডেজার্ট থেকে। ভারতে আগত মুসলিম বণিক, শাসকদের হাত ধরে ভারতবর্ষে এর আগমন ঘটে। তবে আজকে আমরা যে ফালুদা খাই, তা সময়ের সংগে পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে। মুঘলদের পৃষ্ঠপোষকতা, হায়দ্রাবাদের নবাব ও কর্ণাটকের নবাব নিজস্ব অভিযোজনে ফালুদা বৈচিত্র্যতা লাভ করে।


জন্মস্থান থেকে কিন্তু ফালুদা এসেছিল গোলাপজলের মধ্যে স্বচ্ছ নুডুলসের ঠাণ্ডা পানীয় হিসেবে। মুঘল সম্রাটদের পছন্দের যোগ হয়েছিল বরফ কুঁচি সাথে সাগুদানা, আর  দক্ষিণভারতে গিয়ে গোলাপজলের বদলে এসে গেলো নারকেলের জল! তবে কোলকাতাতে জাকারিয়া স্ট্রিটে আমরা যে ধরণের ফালুদা খাই, তা অনেকটা গলা আইসক্রিমের মধ্যে নুডলস দেওয়া একটা মিষ্টি পানীয়!

বাকি থেকে গেল অনেক কিছুই। চাঁপ, ভূনা, কোর্মা বাদ গেল, আর বাদ গেল বিখ্যাত মুসলিম প্রাতরাশ 'নিহারি'র কথা। তবুও যেটুকু আলোচনা হলো, সেগুলো যদি আগামী বছরের ইফতারের জন্য খাবার লিস্টে রাখতে চান, তবে নিশ্চিতভাবে আপনাকে বেশ কয়েকদিন পেট খালি রেখে যেতে হবে জাকারিয়া স্ট্রিটের ফুড ফেস্টিভেলে! আর হ্যাঁ, চেষ্টা করবেন আত্মীয়-বন্ধুদের সাথে যেতে... তাহলে আনন্দটাও ভাগ হয়, আর খরচটাও ভাগ হয়!

ছবিসূত্র: সমস্ত ছবি ইন্টারনেট থেকে নেওয়া।

তথ্যসূত্র:
1. khadyaroshik.wordpress.com/2018/06/05/the_happenings_at_zakaria/

2. khadyaroshik.wordpress.com/2018/06/10/an_expedition_in_ramzan/

3. en.wikipedia.org/wiki/Rooh_Afza
https://food52.com/blog/24195-history-of-sheermal-naan?__cf_chl_jschl_tk

4. bangla.popxo.com/2019/06/harees-to-haleem-the-story-of-ramadans-favourite-dish-in-bengali/

5. dailyo.in/bangla/arts/bakarkhani-nihari-zakaria-street-kolkata-street-food-valentines-day/story/1/29463.html

6. blogs.eisamay.indiatimes.com/rupayanbhattacharya/kolkata-food-street-of-eid/
https://platesofjoy.wordpress.com/2019/06/09/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A7%87-%E0%A6%87%E0%A6%AB%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87/

7. bengali.oneindia.com/news/kolkata/foods-one-must-try-during-the-eid-celebration-037378.html

8. scroll.in/article/741707/ramzan-food-exploring-iftar-in-one-of-kolkatas-oldest-neighbourhoods

9. kitchenofdebjani.com/2016/07/ramzan-food-walk-kolkata-zakaria-street/

10. odhikar.news/exclusive/5903/%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A6%88%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%9C

11. indiatimes.com/news/india/the-1000-year-history-of-the-kebab-on-your-plate-251253.html

12. desiblitz.com/content/history-kebab

13. thewall.in/magazine-book-review-damu-mukherjee-on-kabab-kissa-authored-by-nilanjan-hazra/

14. roar.media/bangla/main/food/a-brief-history-of-haleem/

15. food.ndtv.com/opinions/chicken-chaap-bengals-love-affair-with-awadhi-food-1286969?amp=1&akamai-rum=off

16. food.ndtv.com/food-drinks/chicken-changezi-the-history-of-the-flavoursome-curry-and-its-supposed-connection-with-mongolian-rul-1740019?amp=1&akamai-rum=off

17. news18.com/news/lifestyle/food-from-persia-to-your-plate-origin-history-and-types-of-biryani-1336569.html

18. anandabazar.com/amp/calcutta/people-are-gathering-at-haji-allauddin-sweets-to-taste-the-delicacies-1.1000324

19. bengali.news18.com/news/food-recipe/nawab-humayun-fed-iraninans-indian-khidri-in-return-they-introduced-firni-in-india-188730.html

20. hungryplatoon.wordpress.com/2017/06/05/%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4/amp/

21. scroll.in/article/741707/ramzan-food-exploring-iftar-in-one-of-kolkatas-oldest-neighbourhoods


Comments

  1. Good job Salil da, my mouth had become watery seeing variety of food items during the auspicious Ramzan month.

    ReplyDelete
  2. বাপরে, কত তথ্য সমৃূদ্ধ লেখারে।কত কিছু জানলাম।

    ReplyDelete
  3. উফফফফ.... এই প্রতিবেদন পড়ে বড়ই বেদন অনুভব করছি। কোরোনার দাপটে এই বছরও জাকারিয়া স্ট্রীট যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। ওদিকে আপনি এতো সব ভুবনভোলানো খাবারের ছবি ও তাদের সব মনরঞ্জক ইতিহাসের বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছেন। এই ভাবে কি আর থাকা যায়? যাইহোক এটা আলাদাভাবে save করে রাখছি next year যখন যাবো ঘুরে ঘুরে সব try করবো আর আপনাকে মনে মনে ধন্যবাদ দেবো। আপনার কলমে কলিকাতার লক্ষৌ-র এই ইতিবৃত্য স্বাদু স্বাদু!!!

    ReplyDelete
  4. আপনার লেখা পড়ে মন ও পেট দুটোই ভরলো। এটাইতো ভারতীয় সংস্কৃতির অন‌তম বৈশিষ্ট্য.... সকলের থেকে উৎকৃষ্ট জিনিসটা নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করা। সব সময় বিবিধের মাঝে মহা মিলনের প্রচেষ্টা। অত্যন্ত উৎকৃষ্ট মানের লেখার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  5. দারুন ভালো লেখা। জেনে সমৃদ্ধ হলাম আমি ও আমার মত যারা কলকাতা র আদি ইতিহাস জানতে ও জানাতে চায় নতুন প্রজন্ম দের।

    ReplyDelete
  6. কতো কি অজানা... আজ জানলাম।

    ReplyDelete
  7. বহুত রিসার্চ ওয়ার্ক করেছো, বোঝাই যাচ্ছে। ছোটবেলায় মানে কলেজে থাকাকালীন মোহনবাগান মাঠে খেলা দেখার পর কখনো সখনো হালিম খেতাম। এই সেদিনও ওরিয়েন্ট সিনেমার পাশে ড়োধহয় আলিয়া হোটেল হবে লাইন দিয়ে হালিম খেয়েছি। কেন জানিনা পদ টি আমার কোনদিনই পছন্দের ছিল না। আমি এমনিতে মোগলাই খানার ভক্ত,। তবে ফিরনি ও ফালুদা( আমি তো ফেলুদা বলি) আমার বেশ লাগে। একটা ফুড ওয়াক করো সকল সকাল ..

    ReplyDelete
  8. মন দিয়ে পড়লাম, দারুন সব তথ্য জানলাম

    ReplyDelete
  9. দারুন ❤️

    ReplyDelete
  10. Salida, darun laglo

    ReplyDelete
  11. Debasis, very informative! I have to accept that there is lot to know about Kolkata. darun laglo!

    ReplyDelete
  12. দারুন.....আগামি বার সাথে যাবো...নো আদার বন্ধু

    ReplyDelete
  13. লেখা যে এতো সুস্বাদু হতে পারে আগে জানা ছিল না ।

    ReplyDelete
  14. ওনার লেখাটা কপি করা ছাড়া আর কিছু করতে ইচ্ছে করলো না - লেখা যে এত সুস্বাদু হতে পারে আগে জানা ছিল না।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

একটা ঘড়ি, গেট আর এক বিস্মৃত রাজকুমার (The Ghari Ghar Gateway and a forgotten Prince)

নিমতলা আর নিয়ামাতুল্লা ঘাট মসজিদের গল্প (The story of Nimtala and Niyamathullah Ghat Mosque)