Posts

Showing posts from May, 2020

চিংড়িখালি দূর্গ, ডায়মন্ড হারবার : এক ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্থাপত্যের জনশ্রুতি ও সত্যতার গল্প (Chingrikhali Fort, Diamond Harbour : The Myth and Truth behind a Ruined Architecture)

Image
আজ যে জায়গাটার কথা আমি বলছি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই অঞ্চলটা পিকনিক স্পট আর উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হিসেবে বাঙালিদের কাছে খুবই জনপ্রিয়! আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই কোনো না কোনো সময়ে এখানে গেছেন, বিশেষতঃ দক্ষিণ কোলকাতার অধিবাসীরা। অঞ্চলটা হলো ডায়মন্ড হারবার, যা ছিল এক সময়ে সুন্দরবনের অন্তর্গত, এবং পুরোনো নাম ছিল হাজীপুর। ইংরেজ আমলে সুন্দরবনে কিছু নতুন বন্দর বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ডায়মন্ড হারবার উল্লেখযোগ্য। এবার ফিরে আসি বর্তমানে। এখানে যে পিকনিকের জায়গাটি রয়েছে, তার কাছেই রয়েছে একটি ভাঙা দূর্গ, যার কয়েকটা ভাঙা দেওয়াল শুধু বর্তমান, বাকিটা নদীগর্ভে ভাঙনের কবলে অবলুপ্ত হয়েছে। দূর্গটি কতটা বড়ো ছিল, সেটা বোঝা যায় নদীর তীরে বহুদূর পর্য্যন্ত ছড়িয়ে থাকা ভাঙা কেল্লার ইঁটের ছোট ছোট টুকরোর বিস্তৃতি দেখলে। এই দূর্গটা সম্পর্কে জনশ্রুতি রয়েছে, সপ্তদশ শতকে পর্তুগিজ জলদস্যুরা এটি তৈরি করে, লুটের মাল রাখার জন্য। পরবর্তীকালে ইংরেজরা এটি সারিয়ে নিয়ে ব্যবহার করে, এবং নদীর পাড় ভাঙনের সাথে সাথে, এই দুর্গটি পরিত্যক্ত হয়। wikimapia তেও দেখলাম এই দূর্গ পর্তুগিজদের তৈরি বলেই উল

জন্নত-এ-জাকারিয়া : রমজানের সময় জাকারিয়া স্ট্রিটে ইফতারের খানা-খাজানার ইতিহাস (Jannat-e-Zakaria : a brief history of the Iftar foods available at Zakaria Street in Ramzan time)

Image
এখন ইসলামে রমজান মাস চলছে, সামনেই ঈদ। প্রথমেই একটা কথা বলে নি, এই শব্দটাকে আমরা দুভাবে দেখি... রমজান (Ramzan) যা একটি পার্শিয়ান শব্দ, এবং রমদান (Ramadan) যা একটি আরবিক শব্দ। দুটোই সঠিক, এবং দুটোই ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি অবশ্য ছোটবেলা থেকেই রমজান শুনে আসছি, তাই সেটাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কোলকাতায় যে রমজান পালন হয়, তার সাধারণতঃ তিনটে দিক আপনারা দেখতে পাবেন। প্রথমতঃ, ঈশ্বরের প্রতি অপার ভক্তি। দ্বিতীয়তঃ, রাজনীতির বিভিন্ন কায়দাকৌশল। তৃতীয়তঃ, বিভিন্ন ধরণের মোগলাই বা পার্শিয়ান খাদ্য ও পানীয়ের সম্ভার! আমি এই তৃতীয় দিকটা নিয়েই আলোচনা করবো। এই সময়টা কোলকাতার প্রধান মুসলিম এলাকাগুলোতে, অর্থাৎ মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, পার্কসার্কাস, জাকারিয়া স্ট্রীট... এসব এলাকায় সন্ধ্যার পরে পাওয়া যায় প্রচুর ইফতারের খাবার। (সূর্যাস্তের পরে উপবাসভঙ্গ করার জন্য যে মিল খাওয়া হয়, তাকেই ইফতার বলে)। বিগত কয়েকবছর ধরে, আমাদের এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে ইফতারের খাবারের স্বর্গ হিসেবে উঠে এসেছে জাকারিয়া স্ট্রিটের নাম। এর প্রধান কারণ হিসেবে আমার মনে হয়েছে, কসমোপলিটন অঞ্চল হিসেবে শহরের মাঝে অবস্থান ও যাতায়াতের সুবিধা।

নতুন কোলকাতার পুরোনো ভুতেদের গল্প (Story of the Old Ghosts of New Calcutta)

Image
ভূত মানে তো অতীত! এই অতীতের স্মৃতি কখনো আমাদের সুখ দেয়, কখনো কষ্টও দেয়। আবার সে কখনো ভয়াল স্মৃতিকে টেনে নিয়ে আসে বর্তমানে... যা শুনলে আমাদের গা ছম-ছম করে ওঠে! রাজশেখর বসু তো এই প্রসঙ্গে বলেই গেছেন - "এই কলকাতা শহরে রাস্তায় যারা চলাফেরা করে- কেউ কেরানি, কেউ দোকানি, কেউ মজুর, আর কেউবা অন্য কিছু। তা মোটেই নয়। তাদের মধ্যে সর্বদাই দু-চারটে ভূত পাওয়া যায়। তবে চিনতে পারা দুষ্কর।" যেকোনো পুরোনো জিনিসের সাথেই মিশে থাকে কিছু গল্প। আমাদের কল্লোলিনী কোলকাতা অনেক আধুনিক হয়ে উঠলেও, তা বহন করে চলেছে অনেক পুরোনো স্মৃতি। আর সেই স্মৃতির অতলেই রয়েছে কোলকাতার কিছু পুরোনো ভুতুড়ে জায়গার গল্প। কোলকাতার ভুতুড়ে জায়গার গল্প বলতে হলে শুরু করা উচিত একদম খাস ভুতেদের ডেরা থেকে, যা হলো কবরস্থান! কোলকাতায় কবরস্থানের অভাব নেই! এর মধ্যে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-গ্রিক-ইহুদি-আর্মেনিয়ান-চিনে সবই আছে। আমি শুরু করবো সাউথ পার্ক সেমেটারি থেকে। এই কবরখানাটি আছে পার্কস্ট্রিটের শেষপ্রান্তে, মল্লিকবাজার ক্রসিংয়ের কাছে। ইংরেজি ১৭৬৭ সালের এটি খোলা হয়, এবং কবর দেওয়া হয় ১৭৯০ সাল পর্যন্ত। শহরের একটা প্রাচীন চার্চহীন কবরখা