Posts

Showing posts from October, 2022

শ্রী শ্রী ভুবনেশ্বর ও শ্রী শ্রী রামেশ্বর শিব মন্দির, কালীঘাট (Sri Sri Bhubaneswar and Sri Sri Rameswar Shiv Temple, Kalighat)

Image
কালীঘাট মন্দিরটির খুব কাছেই ৬০, ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রীটে রয়েছে এক জোড়া শিবমন্দির, যা চারদিকের দোকান ও বাড়ির জন্য খুব ভালো করে রাস্তা থেকে দেখা যায় না। মন্দিরদুটি প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন ধনী ব্যবসায়ী শ্রী বৈদ্যনাথ হালদার, মোটামুটি ১৭৫০ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। মন্দিরদুটির সামনে রয়েছে একটি সংকীর্ণ উঠোন। মন্দিরদুটিতে দুটো শিব লিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত, যাদের নাম যথাক্রমে শ্রী শ্রী ভুবনেশ্বর শিব ও শ্রী শ্রী রামেশ্বর শিব। এই লিঙ্গদুটি উড়িষ্যা থেকে বানিয়ে, নদীপথে আনা হয়েছিল। মন্দিরের গায়ে হয়তো কোনো সময়ে টেরাকোটার কাজ থাকতে পারে, কিন্তু বার বার সংস্কারের ফলে সেই কাজ আজ বিলুপ্ত। মন্দিরের ভিতরে এই সংস্কারের কয়েকটি ফলক এখনো রয়েছে। দিনে দুবার এই মন্দিরে পুজো হয়, বাকি সময়ে গেট বন্ধ থাকে। স্থানীয় কিছু বাচ্চা ছেলে মেয়ে এই উঠোনে খেলে, তাদের সাহায্য নিয়েই আমি এই মন্দিরদুটো দেখলাম। বিশেষ তথ্য সহায়তা: কিঞ্জল বোস 

রানাঘাট: নামকরণ, পালচৌধুরী বাড়ি এবং জোড়া শিব মন্দির (Ranaghat: Naming, Palchowdhury House and Twin Shiv Temples)

Image
রানাঘাট নামটা শুনলে আমার যে কথাটা প্রথম মাথায় ভেসে ওঠে, সেটা হলো ছানার জিলিপি এবং পান্তুয়া! কিন্তু ঐতিহাসিক দিক থেকেও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এই শহর। নদীয়া জেলার একটি মহকুমা শহর রানাঘাটের নামকরণের পিছনে রয়েছে বেশ দুটি যুক্তি। ১. পূর্বে এখানে 'রণা/রানা' নামের একজন ডাকাতের খুব উৎপাত ছিল। তার প্রতিষ্ঠিত একটি কালী মূর্তি এখনো পূজিত হয়। তাই ডাকাতের নামে এই অঞ্চলের নাম রানাঘাট। ২. রানা মানসিংহ, একবার যশোর (বর্তমানে বাংলাদেশে) যাবার পথে, এই অঞ্চলে চূর্ণী নদীর তীরে একটি ঘাটে অবতরণ করেন। রানার অবতরণের ঘাট, এই থেকে অঞ্চলের নামকরণ হয় রানাঘাট। রানাঘাটের নাম বিখ্যাত হয় পালচৌধুরি পরিবারের জন্য। এদের এক পূর্বপুরুষ কৃষ্ণ পান্তি (১৭৪৯ - ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দ) খুব সাধারণ অবস্থা থেকে, ব্যবসা করে অনেক ধনসম্পত্তি করেন, এবং রানাঘাটে প্রচুর জায়গা কিনে নিজেদের জমিদারির পত্তন করেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের থেকে পান 'পালচৌধুরি' পদবী। এনার উত্তরপুরুষরা রানাঘাট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করেন অনেক মন্দির, ঘাট এবং স্কুলের। আজকের দিনে কিন্তু পালচৌধুরিদের বিরাট সাম্রাজ্যের বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। শরি

রিষড়ার শ্রীমানি বাড়ির দুর্গাপুজো (Durga Puja of Srimani Family of Rishra, Hooghly)

Image
হুগলী অঞ্চলে অনেকগুলো বনেদি বাড়িতে দুর্গাপূজা হয়, আর তার মধ্যে অনেকগুলোই বিখ্যাত হয়ে উঠেছে মিডিয়ার কল্যাণে। কিন্তু কিছু এমন পুরনো বাড়ি রয়েছে, যার পুজো নিষ্ঠা মেনে হলেও, এখনো সেরকম মিডিয়ার নজর পরে নি। এরকমই একটি বাড়ি হলো হুগলীর গঙ্গাপাড়ের জনপদ রিষড়ার শ্রীমানি পরিবারের দুর্গাপুজো। ভাগ্যের সন্ধানে শ্রীমানি পরিবারের বাস এখানে শুরু হয় মুসলিম আমলের শেষের দিক থেকে। এনারা মাকরদহের শ্রীমানিদেরই সরাসরি আত্মীয়। পরিবারের উল্লেখযোগ্য পুরুষ হিসেবে নাম পাওয়া যায় শ্রী কৃষ্ণচন্দ্র শ্রীমানির, যিনি এই অঞ্চলের কিছু উন্নতিসাধন করেছিলেন, যার মধ্যে শ্রীমানি ঘাট এখনো বিদ্যমান। পূর্বে এই ঘাট দিয়েই নৌকা চলাচল করতো, পরে একটু পাশে সমশানের গা ঘেঁসে নতুন ফেরিঘাট বানানো হয়।  সেই সময়, কৃষ্ণচন্দ্র শ্রীমানির আমলে বা তার পিতার তত্ত্বাবধানে পরিবারে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো। সেই সূত্রে পুজোর বয়স প্রায় ৩০০ বছর। তবে যথাযথ প্রথা অনুসারে পুজো শুরু হয় কৃষ্ণচন্দ্রের স্ত্রীর আমলে। তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় পর্দাপ্রথার বাড়াবাড়ি থাকলেও, এই পুজোকে তা স্পর্শ করেনি। মহিষাসুর